ইসরাইলী পণ্য বয়কটের আন্দোলন সফল হবে যেভাবে

ইসরাইলী পণ্য বয়কটের আন্দোলন সফল হবে যেভাবে

ইসরাইলী পণ্য বয়কটের আন্দোলন সফল হবে যেভাবে 

-আইবি সোহেল

পৃথিবীর কোথাও যখন কোন দেশ মুসলমানদের উপর আঘাত হানে (ঈমানে অথবা স্বশরীরে) তখন সে দেশের পণ্য বয়কটের প্রচারণা চাউর হয়। যেমন ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, ইন্ডিয়া ইত্যাদি দেশগুলো প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটায়। তখন এ দেশগুলোর পণ্য বয়কট করার আহবান সোশ্যাল মিডিয়া খুব প্রচার হয়। সম্প্রতি গাজার মুসলমানদের উপর দখলদার ইসরায়েলী হামলার নিন্দা হচ্ছে বিশ্বজুড়ে।  আর তাই মুসলিম দেশগুলোতে ইসরায়েলপন্থী ব্যবসায়ীদের পণ্য বয়কটের ডাক উঠেছে। কিন্তু এ ডাক বাস্তবে কিভাবে সফল করা যায় তা নিয়ে আজ আলোচনা করবো।

আসলে কারো পণ্য বয়কট করতে হলে তার পণ্যের বিপরীতে আরেকটি পণ্য দিতে হয়। আমরা যদি কাফিরদের পণ্য বর্জন করতে চাই, তবে সর্বপ্রথম মুসলমানদের পণ্য থাকতে হবে।  আপনি যদি বিকল্প পণ্য তৈরী না করতে পারেন, তবে কাফিরদের পণ্য বয়কটের আন্দোলন কখন সফল হবে না। আবার মুসলমানদের পণ্যের মধ্যেও যদি ইসলামী চেতনা না থাকে, তবে সেক্ষেত্রেও ‍মুসলমানদের সেই ডাকে এক করতে পারবেন না।

এক্ষেত্রে দুটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে-
১. পণ্যটি হতে হবে মুসলমান ব্যবসায়ীর।
২. পণ্যটি ইসলামী চেতনা সমৃদ্ধ হতে হবে।


সত্যিই বলতে, বর্তমানে ব্যবসায় মুসলমানরা অনেক পিছিয়ে পড়েছে। অথচ হাদীস শরীফে বলা হয়েছে, “তোমরা ব্যবসা করো, কেননা রিজিকের ১০ ভাগের ৯ ভাগই রয়েছে ব্যবসায়।” (আল মুগনি: ১/৪১৯)
কিছু মুসলিম ব্যবসায়ী যদিও থাকেন, তবে ইসলামী চেতনা সমৃদ্ধ পণ্য বিক্রি করা ব্যবসায়ীর যথেষ্ট অভাব আছে।  ইসলামী চেতনা সমৃদ্ধ পণ্য বলতে আমি আসলে বুঝাচ্ছি, আখেরী নবী হাবীবুল্লাহ হযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে সমস্ত পণ্য ব্যবহার করেছেন, সে সমস্ত পণ্য দ্রব্যকে।  এই সমস্ত পণ্য-দ্রব্য ব্যবহার করলে নবীজির সুন্নত আদায় হবে, তাই এ সমস্ত পণ্যকে সুন্নতি পণ্য বলে।

এক্ষেত্রে সুন্নতি পণ্য কি হতে পারে, সেগুলো হাদীস শরীফ গবেষণা করে প্রথমে বের করতে হবে। অতঃপর সেগুলো উৎপাদন বা সংগ্রহ করা, অতঃপর প্রক্রিয়াজাত করে বাজারজাত করা এবং মুসলমানদের কাছে পৌছানো সেই ব্যবসায়ীর দায়িত্ব।  একইসাথে সেই পণ্যটি আমাদের প্রিয় নবী হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কিভাবে ব্যবহার করেছেন এবং তা নিয়ে কি কি ফজিলত বলেছেন সেগুলো মুসলমানদের জানানো জরুরী।  তাহলে মুসলমানরা সেই সব পণ্য ব্যবহারে সচেষ্ট হবে।

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমানে মুসলমান ব্যবসায়ীরা এক কাজগুলোতে এগিয়ে আসছে না।
তবে ব্যতিক্রম হচ্ছে ঢাকাস্থ রাজারবাগ দরবার শরীফ পরিচালিত ‘আন্তর্জাতিক সুন্নত প্রচার কেন্দ্র’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান।  এই প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসা করে আখেরী নবী হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ব্যবহৃত পণ্য ও দ্রব্য সামগ্রী অর্থাৎ সুন্নতি সামগ্রী নিয়ে।  শুধু পণ্য বিক্রি করেই উনারা ক্ষান্ত হোন না, বরং হাদীস শরীফের কোথায় সেই পণ্যটি ব্যবহারের দলিল আছে এবং সেই পণ্য ব্যবহারে হাদীস শরীফে কি কি ফজিলত বর্ণনা করা আছে সেটাও উনারা প্রচার করেন। পাশাপাশি আধুনিক বিজ্ঞান সেই সমস্ত পণ্য ব্যবহারে যে সমস্ত উপকারিতা আবিষ্কার করেছে, সেগুলোও তারা সংযুক্ত করে দেন।

আমার কাছে মনে হয়েছে, কাফির বা ইহুদীবাদীদের পণ্য বয়কটের ডাক তখনই সফল হবে যখন মুসলমানদের মধ্যে ‘আন্তর্জাতিক সুন্নত প্রচার কেন্দ্র’র মত কাজ সারা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে। কারণ কাফিররা যেভাবে তাদের পণ্য বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিয়েছে তা সামাল দিতে পাল্টা ইসলামী চেতনা সমৃদ্ধ মুসলমান ব্যবসায়ীদের পণ্য লাগবে। আর সেটা একমাত্র আছে আন্তর্জাতিক সুন্নত প্রচার কেন্দ্রের সুন্নতি পণ্যের মধ্যে।

 

Comments