শবে বরাত উনার ফযীলত সম্পর্কে সম্মানিত কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, নিশ্চয় আমি বরকতময় রজনীতে (শবে বরাতে) পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল করেছি অর্থাৎ নাযিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর আমিই ভয় প্রদর্শনকারী। উক্ত রাত্রিতে আমার পক্ষ হতে সমস্ত প্রজ্ঞাময় কাজগুলো ফায়সালা করা হয়। আর নিশ্চয়ই আমিই প্রেরণকারী। (পবিত্র সূরা দুখান শরীফ ঃ পবিত্র আয়াত শরীফ ৩,৪,৫)
আর সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, নিশ্চয় পাঁচ রাত্রিতে দোয়া নিশ্চতভাবে কবুল হয়ে থাকে,
(১) রজব মাসের প্রথম রাতে।
(২) শবে বরাতের রাতে।
(৩) ক্বদরের রাতে।
(৪) ঈদুল ফিতরের রাতে।
(৫) ঈদুল আযহার রাতে।
এই সম্মানিত রাতটি অত্যন্ত বরকতপূর্ণ। সুতরাং
সম্মানিত শবে বরাত উনার ইবাদত-বন্দেগী এমনভাবে
করা উচিত যেভাবে ইবাদত-বন্দেগী করলে মহান
আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা সন্তুষ্ট
হবেন। আর এই সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের জন্যেই
রাজারবাগ দরবার শরীফ উনার সম্মানিত মুর্শিদ ক্বিবলা তিনি উনার ভক্ত-মুরীদানদের নিয়ে নিম্নবর্ণিতভাবে সম্মানিত শবে বরাত উনার রাতে ইবাদত-বন্দেগী করে থাকেন।
* প্রথমে সম্মানিত ইশা উনার নামায মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত
ইমামতিতে আদায় করা হয়।
* এরপর সম্মানিত মীলাদ শরীফ পাঠ করা হয়।
* এরপর সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা তিনি
দীর্ঘ সময়ব্যাপী সম্মানিত মুনাজাত শরীফ পরিচালনা
করেন। এই সম্মানিত মুনাজাত শরীফে মানুষের দুনিয়া,
কবর, হাশর, নশর, মিযান, পুলছিরাত, জান্নাত অর্থাৎ
মানুষের ইহকাল-পরকালে প্রয়োজনীয় সমস্ত বিষয়
মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত দরবার শরীফে
প্রার্থনা করা হয় এবং একই সাথে মুসলমানদের উপর
যুলুম-নির্যাতন করার কারণে কাফির-মুশরিকদের
ধ্বংসের জন্য বদদোয়া করা হয়।
* অতঃপর সম্মানিত শবে বরাত উনার নামায পড়া হয়।
* এরপর ছলাতুত তাসবীহ উনার নামায পড়া হয়- যার
দ্বারা মানুষের সমস্ত গুনাহখতা ক্ষমা হয়।
* অতঃপর তাহাজ্জুদ নামাযের জন্য সময় দেওয়া হয়
যার দ্বারা মহান আল্লাহ পাক উনার নৈকট্য হাছিল হয়।
* এরপর পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা হয়
যা নফল ইবাদতের মধ্যে সর্বোত্তম ইবাদত।
* অতঃপর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা উনার মুবারক
পরিচালনায় কিছুক্ষণ সম্মানিত যিকির-আযকার করা
হয়-যার দ্বারা দিল ইতমিনান ও ইছলাহ হওয়ার কারণ।
* এরপর পুনুরায় সম্মানিত মীলাদ শরীফ পড়া হয়।
অতঃপর তওবা-ইস্তিগফার করানো হয়।
* এরপর পুনুরায় দীর্ঘ সময়ব্যাপী আখিরী মুনাজাত
উনার মধ্য দিয়ে সম্মানিত শবে বরাত উনার রাতের
ইবাদত-বন্দেগীর আনুষ্ঠানিকতা সুসম্পন্ন হয়।
* এরপর শবে বরাত উনার রোযা রাখার উদ্দেশ্যে সাহারী খাওয়ানো হয়।
মূলত সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা তিনি এমনভাবে সম্মানিত শবে বরাত উনার ইবাদত-বন্দেগী ধারাবাহিকভাবে সাজিয়েছেন যে, এক মুহূর্তের জন্যেও গাফেল থাকার সুযোগ নেই। একসাথে একরাত্রে এতগুলো ইবাদত-বন্দেগী করার পর একজন বান্দা বান্দী-উম্মত আশা করতেই পারেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন।
অর্থাৎ সম্মানিত শবে বরাত উনার নিয়ামত সে লাভ করতে পারবে তথা আগামী এক বৎসর তার ভালোই ফায়সালা হবে। আপনি নিজেই চিন্তা করে দেখুন, এত সুশৃঙ্খলভাবে পৃথিবীর আর কোথাও সম্মানিত শবে বরাত পালন করা হয় না।
মূলত, যামানার সম্মানিত মুজাদ্দিদ উনার উপস্থিতির কারণেই এমন আযীমুশ শানভাবে সম্মানিত শবে বরাত পালন করা সম্ভব হচ্ছে। এখন আপনি যদি নিজের জন্য ভাল ফায়ছালা চান, তাহলে আপনি অবশ্যই রাজারবাগ শরীফে উপস্থিত হয়ে যামানার সম্মানিত ইমাম ও মুজতাহিদ উনার মুবারক তত্ত্বাবধানে সম্মানিত শবে বরাত পালন করবেন। ইনশাআল্লাহ!