ঈদে মিলাদুন্নবীর বিরোধীতার নামে মুসলমানদের বিভক্ত করা বন্ধ করুন

Comments · 1397 Views

ঈদে মিলাদুন্নবীর বিরোধীতার নামে <br> <br>মুসলমানদের বিভক্ত করা বন্ধ করুন

ঈদে মিলাদুন্নবীর বিরোধীতার নামে

মুসলমানদের বিভক্ত করা বন্ধ করুন

লেখা: এস হাবীব

 

অনেক ধর্মীয় বক্তা আছে, মুসলমানদের মিলে মিশে একত্র থাকতে বলে। আলোচনায় বলে, ব্রিটিশরা ডিভাইড এন্ড রুল পলিসিতে মুসলমানদের মধ্যে বিভক্তি তৈরী করে শাসন করেছে। কিন্তু এত ওয়াজের পরও দেখা যায়, ঐ বক্তাই ঈদে মিলাদুন্নবীর বিরুদ্ধে ফতওয়া দিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিভক্তি তৈরী করে কোন্দলের সূচনা করে।

সারা বিশ্বজুড়ে যখন মুসলমানরা কাফিরদের দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে, তখন ঈদে মিলাদুন্নবীর বিরুদ্ধে ফতওয়া দিয়ে মুসলমানদের মধ্যে আরো বিভক্তি তৈরী না করলে কি হতো না ? ঈদে মিলাদুন্নবী তো শুধু বাংলাদেশ বা এ উপমহাদেশ না, বরং সারা বিশ্বজুড়েই পালিত হয় এবং শত-সহস্র বছর ধরেই ঐতিহ্যগতভাবে পালিত হয়ে আসছে। কিন্তু ঈদে মিলাদুন্নবীর বিরুদ্ধে ফতওয়া তো মুসলমানদেরকেই বিভক্ত করে দিচ্ছে।

হয়ত বলতে পারেন, “এই দিবস তো নবী বা সাহাবীরা পালন করেনি, কয়েকশ’ বছর পর চালু হয়েছে, সেই জন্যই তো আমরা নিষেধ করছি। এতে বিভক্তি তৈরী হলে আমাদের কি করার আছে?”

আপনাদের কথার উত্তরে বলতে হয়, নবী-সাহাবীদের পালনেরও দলিল আছে। কিন্তু তারপরও আপনাদের কথা মেনে নেই, পরবর্তী সময়ে তা চালু হয়েছে, তাহলে বলতে হয়- “নবী-সাহাবীদের পালনের দলিল যদি নাও থাকে, তবে পালনের নিষেধের দলিল কি আছে ?”

৭০০-৮০০ বছরের দলিল যদি পাওয়া যায়, তবে ৭০০-৮০০ বছর কত জন অনুসরণীয় আলেম উলামা ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের বিরুদ্ধে ফতওয়া দিয়েছেন, তার রেফারেন্স দিন। আপনারা যেভাবে ওয়াজ-কিতাবে গণহারে ঈদে মিলাদুন্নবীর বিরুদ্ধে ফতওয়া দিচ্ছেন, পালন করলে কাফির, মুশরিক হয়ে যাবে- এমন দাবী করছেন, পূর্বে কতজন মশুহুর আলেম এমন ফতওয়া দিয়েছে ?

আমি জানি পারবেন না। কারণ আপনাদের কথা অনুসারে ঈদে মিলাদুন্নবীর দলিল যেমন ৭-৮শ’ বছর আগে পাওয়া যায় না, তেমনি বিরোধীতার দলিলও পাওয়া যায় না। তার মানে কেউ যদি নবীজির মুহব্বতে এ দিবস পালন করে, তবে আলেম-ওলামা বাধা দেননি, বরং অনেক মশহুর আলেম উলামা নিজেরাই পালন করেছেন, সে দলিল পাওয়া যায়।

সহজ হিসেব হচ্ছে, ঈদে মিলাদুন্নবীর বিরোধীতার ইতিহাস মাত্র ৫০ থেকে ১০০ বছর। কিন্তু পালনের ইতিহাস আপনাদের দাবী অনুসারে ৭০০-৮০০ বছর। সুতরাং নব্য সৃষ্টি যদি থেকে থাকে, তবে ঈদে মিলাদুন্নবীর বিরোধীতাই নব্য সৃষ্টি, যা মুসলমানদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে, মুসলমানদের কোন উপকার করেনি।

Comments