সহশিক্ষা, সহচাকুরীর ভয়াবহতা: অহরহ ঘটছে সহকর্মীর সম্ভ্রমহরণ

Comments · 4014 Views

পর্দার সুমহান বিধান লঙ্ঘন!

মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ উনার ৩৩নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা (মহিলারা) তোমাদের ঘরে অবস্থান কর এবং আইয়ামে জাহিলিয়াতের ন্যায় সৌন্দর্য প্রদর্শন করে রাস্তায় বের হয়ো না।”

উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি মহিলাদেরকে ঘরে অবস্থান করার নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। এবং সৌন্দর্য প্রদর্শন করে রাস্তায় বের হতে নিষেধ করেছেন। অর্থাৎ মহিলাদেরকে ঘর থেকে বের হতে হলে সৌন্দর্য চুপিয়ে রেখে বের হতে হবে। সেজন্য আপাদমস্তক ঢেকে বের হতে হবে। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “মহিলারা পর্দায় থাকবে। যখন তারা বেপর্দা হয়, তখন শয়তান তার দিকে উঁকিঝুকি দিতে থাকে কিভাবে তাদের দ্বারা গুনাহর কাজ করানো যায়।” নাউযুবিল্লাহ!

সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে বেগানা পুরুষ-মহিলার কোনো নির্জন স্থানে একাকী বাস, কিছুক্ষণের জন্যও লোক-চক্ষুর অন্তরালে, ঘরের ভিতরে, পর্দার আড়ালে একান্তে অবস্থান হারাম। এ প্রসঙ্গে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, “সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কোনো পুরুষ কোনো নারীর সাথে একাকী হলেই তাদের তৃতীয় ব্যক্তি হয় শয়তান তথা শয়তান তাদের উভয়কেই গুনাহর কাজে লিপ্ত হওয়ার জন্য ওয়াসওয়াসা দিতে থাকে।” (তিরমিযী শরীফ)

সম্মানিত পর্দার সুমহান এই বিধান লঙ্ঘনের কারণে সমাজে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সমাজে সহশিক্ষা, সহচাকুরী চালু করায় সমাজ ব্যবস্থায় মারাত্মক অশান্তির সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদ, পরকিয়া, অবৈধ গর্ভধারণ, গর্ভপাত ইত্যাদি।

সম্মানিত পর্দার বিধান লঙ্ঘন করে সহশিক্ষা, সহচাকুরী করায় সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী, এমনকি জনগণের কথিত প্রতিনিধিত্বকারী সংসদ সদস্যরাও জড়িয়ে পড়ছে পরকিয়া, অবৈধ গর্ভধারণ, গর্ভপাত, বিবাহ বিচ্ছেদ, যৌন হয়রানীর মতো সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও সমাজ বিরোধী অবৈধ কাজে।

সহকর্মীর সম্ভ্রমহরণের অভিযোগে ক্লিনিক ম্যানেজার আটক:

সহকর্মীকে সম্ভ্রমহরণের অভিযোগে লালমনিরহাটের কাকিনা ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের ম্যানেজার পারভেজ হোসাইনকে আটক করেছে পুলিশ। গতবছর ২০২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী দুপুরে নির্যাতিত মেয়ে সহকর্মী বাদি হয়ে ধর্ষকের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এর আগে গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারী আদিতমারী উপজেলার টেপা পলাশী এলাকা থেকে পারভেজ হোসাইনকে হাতে নাতে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে এলাকাবাসী। আটক পারভেজ হোসাইন নীলফামারীর ডোমার উপজেলার বোরাগাড়ী মধ্যপাড়া গ্রামের ছপিয়ার রহমানের ছেলে। সে কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের ম্যানেজার পদে কর্মরত।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, কাকিনা ডায়াগনোষ্টিক সেন্টারে ম্যানেজার পদে কর্মরত থাকার সুবাদে একই প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকের সহকারী এক মেয়ের (২৬) সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে পারভেজ হোসাইন। সেই সুবাদে বিয়ের প্রলোভনে দু’জনে বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে যাওয়ার অজুহাতে দৈহিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।

গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারী রাতে প্রেমিকার সাথে দেখা করতে তার বাড়ি টেপা পলাশী গ্রামে যায় পারভেজ হোসাইন। দ্রুত বিয়ের আশ্বাস দিয়ে মেয়েটির সম্ভ্রমহরণ করে। এ সময় মেয়েটির আতœচিৎকারে বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা এসে ধর্ষক পারভেজ হোসাইনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

উল্লেখ্য এরকম অনৈতিক ঘটনা আমাদের দেশের স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন সেক্টরে অহরহ ঘটছে। সম্মানিত পর্দা উনার বিধান লঙ্ঘন করে সহশিক্ষা ও সহচাকরীর কারণে অবাধ মেলামেশার সুযোগ তৈরী হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এই অবাধ মেলামেশার যে পরিবেশ করা হয়েছে, তারই শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধিত্বকারীরা। এই ভয়াবহ অপরাধ থেকে বাঁচতে হলে মুসলিম অমুসলিম সকল দেশে সর্বক্ষেত্রে সম্মানিত পর্দা উনার বিধান জারী করা আবশ্যক। অন্যথায় এই অবাধ মেলামেশার মতো গর্হিত অপরাধ বন্ধ করা কোনভাবেই সম্ভব নয়।

Comments