প্রসঙ্গ ট্রান্সজেন্ডার মতবাদ : মনের লিঙ্গের শেষ কোথায়?

প্রসঙ্গ ট্রান্সজেন্ডার মতবাদ : মনের লিঙ্গের শেষ কোথায়?

প্রসঙ্গ ট্রান্সজেন্ডার মতবাদ : মনের লিঙ্গের শেষ কোথায়?

বাংলাদেশের স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে ‘শরীফার গল্প’ নামক একটি অধ্যায় নিয়ে বেশ বিতর্ক শুরু হয়েছে। ‘ট্রান্সজেন্ডার’ ইস্যু নিয়ে হচ্ছে আলোচনা সমালোচনা। গল্পের ভেতর কয়েকটি বিষয় শিক্ষার্থীদের বুঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে, আমরা সেগুলো নিয়ে আলোচনা করবো।

 যেমন-

১. গল্পের ভেতর প্রশ্ন করা হয়েছে, “আমরা নিজেদের ছেলে এবং মেয়ে বলে আলাদা করে চিনি কিভাবে?” উত্তরে গল্পেই বলা হয়েছে, “আমরা যে মানুষকে শারীরিক গঠন দেখেই কাউকে ছেলে বা মেয়ে বলছি সেটা সবার ক্ষেত্রে সত্যি নয়। ”

 অর্থাৎ গল্পটি বাচ্চাদের যা শেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে, তার সারসংক্ষেপ হচ্ছে- বর্তমানে শরীরের গঠন দেখে সমাজের চাপিয়ে দেয়া বিষয় হচ্ছে জেন্ডার। কিন্তু জেন্ডার চাপিয়ে দেয়ার কোন বিষয় নয়, বরং সে নিজেকে (মনে মনে) যা মনে করে সেটাই তার জেন্ডার হওয়া উচিত।

 এখানে জানার বিষয় হচ্ছে, আসলে জেন্ডার কাকে বলে?

 জেন্ডার (Gender) শব্দের আবিধানিক অর্থ ‘লিঙ্গ’। বৈজ্ঞানিক ভাষায়, প্রজননের সময় কোন ব্যক্তির জৈবিক ভূমিকাকেই তার জেন্ডার বলে। অর্থাৎ সন্তান উৎপাদনের সময় একজন ব্যক্তি লিঙ্গ নির্ধারণী XXক্রোমোসোম দিবে নাকি XY ক্রোমোসোম দিবে, তাই হচ্ছে ঐ ব্যক্তির জেন্ডার। যদি কোন ব্যক্তি XY ক্রোমোসম দেয় তবে সে পুরুষ, আর যদি XX ক্রোমোসম দেয় তবে সে নারী। যেহেতু একজন মানুষ প্রজননের সময় XX ও XYসেক্স ক্রোমোসমের বাইরে অন্য কিছু দেয় না, তাই বৈজ্ঞানিকভাবে নারী-পুরুষের বাইরেও জেন্ডার বলে কিছু নেই। তাই বর্তমানে পাঠ্যবইয়ে মনের লিঙ্গ বা সামাজিক লিঙ্গ বলে যা পড়ানো হচ্ছে, তার সাথে বিজ্ঞান বা বাস্তবতার বিন্দুমাত্র মিল বা সংযোগ নেই।

 উল্লেখ্য, কোন ব্যক্তি যদি প্রজননে অসমর্থ হয়, তবে সে প্রজনন প্রতিবন্ধী হিসেবে গণ্য হয়। বাংলাদেশে এ ধরনের প্রতিবন্ধীরা হিজরা নামে পরিচিত। তবে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এ ধরনের প্রতিবন্ধীরা সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন। এ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) শিশু সার্জারি বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. মুহম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, “সৃষ্টিকর্তা ছেলে এবং মেয়ের বাইরে অন্য কোনো লিঙ্গের কাউকে সৃষ্টি করেননি। হয়তো তাকে ছেলে হতে হবে অথবা মেয়ে। এর বাইরে কোথাও তৃতীয় লিঙ্গ বলে কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই। বিজ্ঞান বা মেডিকেল সায়েন্সেও তৃতীয় লিঙ্গ বলতে কিছু নেই। তবে ডিফেকটিভ ডিজ অর্ডার অথবা ‘ডিজ অর্ডার অব সেক্সুয়াল ডেভেলপমেন্ট’ আছে। ফলে তাদের সঠিক সময়ে চিকিৎসা দেওয়া হলে পুরোপুরি সুস্থ হওয়া সম্ভব। ” (তথ্যসূত্র: দৈনিক সময়ের আলো, ৫ আগস্ট, ২০২২)

 ২. প্রশ্ন হতে পারে, পাঠ্যবইয়ে তো ‘মনের লিঙ্গ’ পড়ানো হচ্ছে, তো কেউ যদি মনে মনে নিজের লিঙ্গ ঠিক করা শুরু করে, তবে সেটা কত প্রকার ও কি কি হতে পারে?

 আসলে মনে তো কত কিছুই চাইতে পারে। “কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা, মনে মনে গানের সুরে মেলে দিলেম এই ডানা, মনে মনে”, অর্থাৎ বাস্তবে কারো ডানা নেই, কিন্তু মনে সে মনে ডানা উড়িয়ে পাখির মত উড়তে পারে। তারমানে মনের কিন্তু কোন ধরা-বাধা সীমা নেই, সে যা ইচ্ছা তাই চিন্তা পারে। এখন আমরা যদি মনের লিঙ্গকে স্বীকৃতি দিতে চাই, তবে আসলে কতগুলো লিঙ্গ তৈরী হতে পারে সেটা চিন্তার বিষয়।

 যারা মনের লিঙ্গকে স্বীকৃতি দেয়ার দাবী তুলেছে, তারাই বলছে, মনের লিঙ্গের কোন সীমা নেই। জেন্ডার উইকি নামক একটি ওয়েবসাইট এখন পর্যন্ত প্রায় ৬৫ এর মত মনের লিঙ্গ চিহ্নিত করতে পেরেছে। ‘মেডিসিন নেট ডট’ নামক একটি ওয়েবসাইট ৭২টি মনের লিঙ্গকে অন্তর্ভূক্ত করতে পেরেছে। এবং এই তালিকা সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।

অর্থাৎ মনের লিঙ্গ বলতে যারা শুধু ট্র্যান্সজেন্ডার মনে করছেন, এটা মোটেও শুদ্ধ নয়। ট্রান্সজেন্ডার হচ্ছে কিছু মনের লিঙ্গের সমষ্টিগত নাম, এর বাইরে আরো বহু মনের লিঙ্গ তালিকাভূক্ত হচ্ছে ও হয়েছে।

 

৩. মনের লিঙ্গকে বৈধকে করতে পাঠ্যবইয়ে শেখানো হচ্ছে, “প্রত্যেকের নিজের মত, অনুভূতি, পছন্দ-অপছন্দ প্রকাশ করার স্বাধীনতা আছে।”

 এখানে আসলে বুঝার বিষয় আছে। আমাদের সমাজ কতগুলো মৌলিক বিষয়ের উপর ভিত্তি করে দাড়িয়ে আছে। এর মধ্যে একটি অন্যতম বিষয় হচ্ছে, জেন্ডার বা লিঙ্গ পরিচয়। সমাজে ছেলে-মেয়ে পরিচয়ের উপর ভিত্তি করে অনেক কিছুই হয়। যেমন- ছেলে-মেয়েদের জন্য আলাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। হাসপাতালে এমন অনেক চিকিৎসা স্থান আছে যেখানে মেয়ে ডাক্তাররা প্রবেশ করে, পুরুষ প্রবেশ নিষেধ। মেয়েদের জন্য ট্রেনের আলাদা বগি আছে। ছেলে-মেয়েদের জন্য আলাদা টয়লেট আছে। এখানে সবটাই নির্ধারিত হয় জেন্ডারের বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞার উপর ভিত্তি করে লিঙ্গ পরিচয় দিয়ে। কিন্তু যখনই কেউ বিজ্ঞান বাদ দিয়ে কল্পনার লিঙ্গকে হিসেব করা শুরু করবে, তখন নানান সমস্যা তৈরী হবে। এবং আমাদের সমাজ কাঠামোতে সমস্যা হবে। এর কারণ হলো, বৈজ্ঞানিক জেন্ডার হচ্ছে নির্দ্দিষ্ট ও প্রমাণ সাপেক্ষ। অপরদিকে মনের লিঙ্গ নির্দ্দিষ্ট নয় এবং প্রমাণ সাপেক্ষও নয়। মানে কারো এখন মনে হচ্ছে সে মনে মনে ছেলে, কয়দিন পর তার নিজেকে মনে মনে মেয়েও মনে হওয়া শুরু হতে পারে। এমন আরো ৭০টা ধরনের লিঙ্গ পরিচয় তার মনের ভেতর উদ্ভব হতে পারে। আর তার মনের ভেতর কখন কোন লিঙ্গের উদ্ভব হচ্ছে, তার খবর রাখবে কে বলুন? সুতরাং নিজের মত বা চিন্তা বা পছন্দ উদয় হলেই হবে না, সেটা বাস্তবতার সাথে মিল থাকলেই কেবল সেটা প্রকাশযোগ্য হবে।

 ৪. পাঠ্যবইয়ে যে অধ্যায়ে ‘শরীফার গল্প’ আছে, সেই অধ্যায়ের নাম- ‘মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা’। অধ্যায় শুরু হয়েছে বেদে সম্প্রদায় দিয়ে। এ দ্বারা একটি যুক্তি বুঝানো হয়েছে, ‘সমাজে বেদে সম্প্রদায় থাকতে পারলে নারী-পুরুষ বাদে অন্য লিঙ্গরা থাকতে পারবে না কেন?

 আসলে বিজ্ঞানে নারী ও পুরুষ ভিন্ন অন্য কোন জেন্ডার বা লিঙ্গেরই অস্তিত্ব-ই নেই। সুতরাং অন্য লিঙ্গ থাকতে পারবে, কি পারবে না সেই প্রশ্ন বাহুল্য। আর জেন্ডার বা লিঙ্গ শব্দের উদ্ভব কোথা থেকে এটা আগে আমাদের বুঝতে হবে। যেমন- চোখের কাজ হচ্ছে দেখা, হাতের কাজ হচ্ছে ধরা, পায়ের কাজ হচ্ছে হাটা। তেমনি জেন্ডার বা লিঙ্গের কাজ হচ্ছে প্রজনন। কিন্তু মনের লিঙ্গ প্রজনন করতে পারে না, সুতরাং মনের লিঙ্গ বা জেন্ডারের কোন গ্রহণযোগ্যতাই নেই। আর বেদে সম্প্রদায়ের কথা যদি বলতে হয়, তবে বলতে হবে- বেদে সম্প্রদায় অন্যদের থেকে পৃথক হয়েছে, তাদের পেশা ও সংস্কৃতির কারণে। তারা কিন্তু জেন্ডারের কারণে পৃথক হয়নি। বরং তাদের সমাজেও পুরুষ-মহিলা দুটি জেন্ডারই বিদ্যামান। পেশা বা সংস্কৃতি নির্ভর সম্প্রদায়কে প্রজনন বা জেন্ডারের সাথে মিলিয়ে ফেলা এক ধরনের লজিক্যাল ফ্যালাসি বা কুযুক্তি।

 ৫. আসলে মনের লিঙ্গকে যদি স্বীকৃতি দিতে হয়, মনের যে কোন দাবীকেই তো স্বীকৃতি দিতে হবে। মানে কেউ যদি মনে মনে নিজেকে প্রধানমন্ত্রী মনে করে তবে তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। কেউ যদি রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে মনে করে, তবে তাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। কেউ যদি নিজেকে পুলিশের আইজি বা প্রধান বিচারপতি কিংবা সেনাপ্রধান হিসেবে দাবী করে, তবে তাকে প্রতিটার স্বীকৃতি দিতে হবে। কিন্তু সমাজ তা দিবে না। কারণ সমাজ কল্পনা নির্ভর চলে না। সমাজের প্রতিটা স্তর বাস্তবতা ও দলিল-প্রমাণ নির্ভর। কেউ নিজেকে মনে মনে কী দাবী করলো সেটা সমাজের কাছে কোন দাম নেই। যে যদি তার দাবীর সাপেক্ষে দলিল ও প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারবে, তাকেই সমাজ সে হিসেবে মেনে নিবে।

 এ সম্পর্কে একটা গল্প আছে, ভারতের একটা পাগলা গারদ নিয়ে। ভারতের রাঁচির পাগলা গারদ, নাম- ‘সেন্ট্রাল ইন্সটিটিউট অফ সাইকিয়াট্রি’। তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওয়াহরলাল নেহরু। সে সময়ে পাগলা গারদ মানেই রাঁচি। একবার জওয়াহরলাল নেহরু রাঁচির পাগলাগারদ পরিদর্শনে গেছে। নেহেরু তাঁর দেহরক্ষী ও পার্শ্বচরদের বললো, তোমরা বাইরেই দাঁড়াও, এটা সেনসিটিভ এরিয়া। এত লোকজন দেখে তাঁরা ভয় পেয়ে যেতে পারে। আমি একাই যাব। নেহেরু ভিতরে ঢুকে খানিক এগোতেই এক সুদর্শন মধ্যবয়স্ক লোক তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে এগিয়ে এলো। প্রধানমন্ত্রী ভাবলো এ সুপার হয়ত। লোকটি এবার নেহরুকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সব দেখাচ্ছে, এই যে, প্রথমে এইখানে ট্রীটমেন্ট শুরু হয়, এখানে কাউন্সেলিং রুম, এক্সট্রীম কেসে আবার শক দিতে হয়, সেটা এখানে। আর এই যেখানে আপনি এখন এলেন, সেখানে যাঁরা কিছুটা ভাল হয়ে গেছেন, তাঁরা বাধাহীনভাবে ঘুরতে পারে। তা মহাশয়ের পরিচয়?

জওয়াহরলাল অবাক হলো, ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে এ লোক চেনে না? খবরের কাগজও কি পড়ে না সে?

নেহরু স্মিত হাসি মুখে এনে বললো, আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওয়াহরলাল নেহরু। লোকটি আস্তে আস্তে তাঁর পিঠ চাপড়ে দিয়ে বললো, “একদম ভাববেন না, সেরে যাবে। পুরো সুস্থ হয়ে যাবেন আপনি। আমিও যখন প্রথম এসেছিলাম, নিজেকে মোতিলাল নেহরু (নেহরুর বাবা) বলে পরিচয় দিতাম।”

 অর্থাৎ মানুষ যদি মনে মনে নিজেকে যা খুশি তাই দাবী করা শুরু করে, তবে সে মানসিক অসুস্থ, তার চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু আপনি সমাজে সেই পাগলের পাগলামীর স্বীকৃতি চান,তবে সমাজটাকেই আপনি পাগলা গারদ বানিয়ে ফেলবেন। সমাজকে তো আর পাগলা গারদ বানানো যাবে না, মানসিক অসুস্থদের মানসিক চিকিৎসা দিতে হবে। আর মনের লিঙ্গওয়ালারা যে এক ধরনের মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত এটা তো সবাই জানে। তাদের মানসিক অসুস্থতার নাম জেন্ডার ডিসফোরিয়া। যার জেন্ডার ডিসফোরিয়া হয়েছে তাকে চিকিৎসাকেন্দ্র নিয়ে চিকিৎসা দিন, সুস্থ করুন। কিন্তু আপনি যদি সমস্ত সমাজকে জেন্ডার ডিসফোরিয়া আক্রান্ত করতে চান, তবে তো বিরাট সমস্যা।

 ৬. শরীফার গল্পে কথাপোকথনের ছলে বলা হচ্ছে- মনের লিঙ্গওয়ালারা তো কারো কোন ক্ষতি করছে না, তাহলে সমস্যা কোথায়?

 কথা হচ্ছে, মনের লিঙ্গওয়ালারা যে অন্যদের ক্ষতি করবে না, তার নিশ্চয়তা কে দিবে?

 ধরেন একজন ছেলে নিজেকে মনে মনে মেয়ে মনে করে। এখন সে তাকে একটি মহিলা হল বা হোস্টেলে থাকতে দেয়া হলো। এখন সে যে হঠাৎ করে মনে মনে ছেলে হয়ে উঠে কোন নারীকে যে নিপীড়ন করবে না তার নিশ্চয়তা কি? ইউরোপ-আমেরিকাতে এমন বহু ঘটনা ঘটেছে।

 এরপর ধরুন মেয়েদের দৌড় প্রতিযোগীতা হচ্ছে। এরমধ্যে একজন ছেলে হঠাৎ করে মনে মনে মেয়ে হয়ে মেয়েদের দৌড় প্রতিযোগীতায় অংশ নিলো। স্বাভাবিকভাবে পুরুষের শারিরীক স্বক্ষমতা বেশি হওযায় ঐ মনে মনে মেয়েটি প্রতিযোগীতায় প্রথম হয়ে যাবে। এটা তো অন্য মেয়েদের জন্য বৈষম্য। এজন্য দেখবেন, ক্রিকেট খেলায় ট্রান্সজেন্ডার নিষিদ্ধ ঘোষণা করছে আইসিসি। (তথ্যসূত্র: টিবিএস রিপোর্ট, ২১ নভেম্বর, ২০২৩)

 এরপর ধরুণ পুরুষ-নারীর ভিন্ন টয়লেটের কথা। এখন যে ছেলেটি মনে মনে মেয়ে দাবী করে, সে কোন টয়লেটে যাবে? সে কি মেয়েদের টয়লেট ব্যবহার করবে? সে কি মেয়েদের গোপন অপরেশন রুমে যেতে পারবে? সে কি গালর্স স্কুল-কলেজে পড়ালেখা করবে? এরকম অনেক সমস্যা কিন্তু আছে।

 আবার মনে মনে লিঙ্গওয়ালারা কিন্তু মনে মনে বয়সও নির্ধারণ করে। যেমন, পশ্চিমে এমনও ঘটনা ঘটেছে, এক বয়স্ক লোক একজনকে রেপ করেছে। কিন্তু কোর্টে দাড়িয়ে বলেছে, আমি মনে মনে নিজেকে অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক মনে করি। তাই অপ্রাপ্ত বয়স্কের কোন শাস্তি হবে না।

 অর্থাৎ মনে মনে লিঙ্গওয়ালারা সমাজের জন্য বড় ভয়ঙ্কর এবং সমাজের ক্ষতিকর। যারা দাবী করে, মনে মনে লিঙ্গওয়ালারা কারো কোন ক্ষতি করে না, তাদের সমাজ ব্যবস্থা সম্পর্কে কোন ধারণাই নেই। সমাজ একটি নিয়ম-শৃঙ্খলা ও দলিল-প্রমাণের ভিত্তিতে চলে। এসব মনের লিঙ্গওয়ালারা পুরো সমাজ ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলতা তৈরী করে, পুরো সমাজের ক্ষতি করবে।

 এখন কথা হচ্ছে, মনের লিঙ্গওয়ালাদের আপনি কি করবেন?

সুস্থ সমাজে তাদের স্বীকৃতি দিয়ে পুরো সমাজকে পাগলা গারদ বানাবেন, নাকি তাদের মানসিক চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে সুস্থ সমাজে প্রবেশ করাবেন, এই সিদ্ধান্ত আপনাকেই নিতে হবে। 

Comments