ভাইরাল-ট্রেন্ডিং ফ্যাশন এর ফাঁদে মুসলিম সমাজ

ভাইরাল-ট্রেন্ডিং ফ্যাশন এর ফাঁদে মুসলিম সমাজ

 ভাইরাল-ট্রেন্ডিং ফ্যাশন এর ফাঁদে মুসলিম সমাজ

-ইঞ্জিনিয়ার মুস্তাফিজুর রহমান

 গত কয়েকদিন ধরে একটা বিষয় সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখছি, অনেক তরুণ মাথার মধ্যে কিছু একটা নিয়ে নাচছে। ঠিক কি কারণে এমনটা করছে বুঝতে পারছিলাম না। পরে শুনলাম, ভারতে নাকি নতুন একটা মুভি রিলিজ হয়েছে, সেই মুভি কোন একটি দৃশ্যে অভিনেতা মদের গ্লাস মাথায় নিয়ে নাচ-গান করে। সেই দৃশ্যকে অনুসরণ করে এখন বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীরা মাথার মধ্যে কিছু একটা নিয়ে নাচ-গান করছে। নাউযুবিল্লাহ।

 আসলে অনলাইন জগতে ভাইরাল-ট্রেন্ডিং খুব মারাত্মক একটা বিষয়। কোন কাফির-মুশরিক কোন নাচ-গান, অশ্লীল অঙ্গ-ভঙ্গী, কথা-বার্তা বললে সেটা ভাইরাল হওয়ার নামে ট্রেন্ডিং চালু হয় টিকটক, ইউটিউব, টুইটারসহ বিভিন্ন সোশাল মিডিয়ায়। এরপর সেই অশ্লীল নাচ-গান, কথা-বার্তা কিংবা অঙ্গভঙ্গী করার জন্য সবাই ঝাপিয়ে পড়ে। নিজেরা সেই অনুকরণে ভিডিও বানিয়ে নিজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আইডিতে পোস্ট করে, ট্রেন্ডিং ফলো করে।

 খুব জঘণ্য একটা জিনিস এই ট্রেন্ডিং। কাফিরদের কুফরী আমল ছড়ানো এবং ট্রেনিং দিয়ে দক্ষ করে তোলার খুব সহজ ব্যবস্থা। একটা ট্রেন্ডিং চালু হলে এমন অবস্থা হয় যে, মানুষ নিজের বউ-বাচ্চা, বাবা-মা, বন্ধু-বান্ধব সবাইকে নিয়ে সেই ট্রেন্ডিং ফলো করতে নেমে যায়, দ্বিকবিদ্বিক কোন হুশ থাকে না। এমনকি অনেক মওলানা-ওয়ায়েজ সেই ট্রেন্ডিং এর সুরে ওয়াজ করে, অঙ্গভঙ্গী পর্যন্ত করে। নাউযুবিল্লাহ।

 অথচ একজন মুসলমান হিসেবে কাফিরদের তর্জ-ত্বরিকায় গা ভাসানো মুসলিম উম্মাহের কাম্য নয়। মুসলমানদের কখনই উচিত নয়, কাফিরদের অনুসরণ করা। কারণ হাদিস শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, যে ব্যক্তি যার সাথে মিল রাখবে, তার হাশর নশর তার সাথে হবে। আজকে যারা ট্রেন্ডিং ফলো করে কাফিরদের অনুসরণ অনুকরণ করতে ব্যস্ত, কাল কেয়ামতে ময়দানে সে ব্যক্তি কাফিরদের সাথে উঠবে এবং তাদের সাথেই তাদের পরকাল হবে। নাউযুবিল্লাহ।

 আসলে, ট্রেন্ডিং শব্দের অর্থ হচ্ছে চলমান প্রবাহ। ট্রেন্ডিং ফ্যাশন বলতে বোঝায় হালের ফ্যাশন। কাফির-মুশরিকরা তাদের সংস্কৃতি ও তর্জ-তরিকাকে হালের ফ্যাশন বা ট্রেন্ডিং হিসেবে চালিয়ে দিচ্ছে এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বানিয়ে ছাড়ছে। এক্ষেত্রে মুসলমানের উচিত ছিলো মুসলিম সংস্কৃতি অর্থাৎ আখেরী নবী হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নত সমূহকে প্রচার করা, ছড়ানো। প্রতিনিয়ত নিত্য-নতুন মোড়কে নানান উপলক্ষে ছড়ানো। মুসলমানরা এক একটি সুন্নত মুবারক নিজে পালন করবে, অতঃপর অন্যদের জানানোর চেষ্টা করবে, সুন্নত মুবারক পালন নিয়ে তখন ট্রেন্ডিং চালু হবে। তখন সুন্নত মুবারক পালনে সবাই অভ্যস্ত হবে, দক্ষ হবে।

 কথায় বলে, একটা গ্লাস কখন খালি থাকে না। হয় সেখানে পানি থাকে, নয়ত সেখানে বাতাস থাকে। আমরা যখন সুন্নত মুবারক সমূহ ছড়িয়ে দিতে পারছি না, সেই সুযোগে কাফির-মুশরিকরা তাদের সংস্কৃতি প্রচার করে মুসলমানদের মধ্যে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। ফলে মুসলমানরা অভ্যস্ত হচ্ছে কাফিরদের সংস্কৃতিতে। ফলশ্রুতিতে ধ্বংস হচ্ছে মুসলমানদের স্বকীয়তা, কোনঠাসা হচ্ছে মুসলমানরা, প্রভাব বিস্তার করছে কাফিররা। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় হচ্ছে আখেরী নবী হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নত মুবারক বিষয়গুলোকে ব্যাপক প্রচার এবং মানুষজনকে আমল করতে উৎসাহিত করা। তাহলেই কাফিরদের সংস্কৃতি দূর হবে, ইসলামী সংস্কৃতি জারি হবে ইনশাল্লাহ।

 

Comments