সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ইতিহাসে সমুদ্র অভিযান, নৌ-যুদ্ধ, নৌ-বাণিজ্য গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান দখল করে আছে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দয়া ইহসান মুবারক করে আরব উনার পবিত্র ভূমিতে তাশরীফ মুবারক নিয়ে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আলোয় আরববাসীকে আলোকিত করার পর মূলত নৌ-চালনায় মুসলমানগণ দক্ষ হতে থাকেন। ইসলামপূর্ব যুগে আরববাসীরা নৌপথে যাতায়াতে অভ্যস্ত ছিলো না। আরবের হিমিয়ার ও সাবা গোত্রের নিকট কিছু সাধারণ নৌযান ছিলো। তারা এগুলো আভ্যন্তরিন পরিবহনের কাজে ব্যবহার করতো। হিজাজের অধিবাসীগণ সবসময় সমুদ্রযাত্রা এগিয়ে চলতো।
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম পরবর্তী যুগে মিসর ও সিরিয়ার উপকূলে যখন ইসলামী পতাকা উড্ডীন হলো এবং মুসলমানরা রোমকদের যুদ্ধ জাহাজ ও সমুদ্র যুদ্ধ সম্পর্কে ধারণা পেলেন তখন সম্মানিত খিলাফত মুবারক এবং রোমকদের শায়েস্তা করতে নৌবাহিনী গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি হলো।
হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সে সময় সিরিয়া ও পশ্চিম জর্দান বাহিনীর প্রধান সেনাপতি ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন দক্ষ এবং কৌশলী বীর সেনানী। রোমক বাহিনীর সাথে উনার প্রায়ই মুকাবিলা করতে হতো। রোমকরা সাধারণত সমুদ্র উপকূল দিয়ে হামলা করতো। তাদের আলাদা নৌবাহিনী ছিলো। তবে মুসলমানগণ সবসময়ই তাদের সমুচিতভাবে পরাজিত করতেন। তবে রোমকদের প্রতিরোধ করতে হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি একটি শক্তিশালী ও সুসংগঠিত নৌবাহিনী তৈরীর প্রয়োজনীয় অনুভব করতে লাগলেন।
আমিরুল মুমিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিলাফতকালে হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নৌবাহিনী গঠিনের প্রস্তাব দিয়ে চিঠি মুবারক প্রেরণ করলেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি ব্যাপক যাচাই-বাছাই করে নৌবাহিনী গঠনের অনুমতি মুবারক প্রদান করলেন। তবে শর্ত দিলেন যে, যারা স্বেচ্ছায় নৌবাহিনীতে যুক্ত হবে কেবলমাত্র উনাদের দিয়েই নৌযুক্ত করা যাবে।
২৮ হিজরীতে মূলত মুসলিম নৌবাহিনীর গোড়াপত্তন হয়। ইতিহাসে মুসলিম নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে হযরত আমীরে মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নাম মুবারক স্বর্ণাক্ষরে লিখিত রয়েছে। তিনি মুসলিম নৌবাহিনী গঠন করে সর্বপ্রথম সাইপ্রাস দ্বীপে অভিযান চালান। সাইপ্রাসবাসীরা তখন হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিকট সন্ধি করে এবং জিযিয়া প্রদানে সম্মত হয়। নৌবাহিনী গঠনের পর প্রথম বিজয়েই মুসলমানগণ উনাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা বৃদ্ধি পায়। এরপর মুসলিম বাহিনীকে আরো শক্তিশালীরুপে গঠন করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
Muhammad Ibrahim Sohel 2 yrs
পড়ে ভালো লাগলো। এমন ইতিহাস ভিত্তিক লেখা আরো চাই। ধন্যবাদ।