হঠাৎ সমাজে ট্রান্সজেন্ডার বাড়ছে কেন?

হঠাৎ সমাজে ট্রান্সজেন্ডার বাড়ছে কেন?

 হঠাৎ সমাজে ট্রান্সজেন্ডার বাড়ছে কেন?

-মুহম্মদ মুহিউদ্দিন রাহাত

 খবর-১:

সমকামিতা, ঢাকায় কসাইয়ের হাতে কসাই খুন

রাজধানী ঢাকার উত্তরায় কসাইয়ের হাতে কসাই খুনের ঘটনা ঘটেছে। একজন কসাই অন্য কসাইয়ের সাথে সমকামীতায় লিপ্ত হতে গেলে ভূক্তভোগী কসাই নিপীড়ক কসাইকে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করলে তার মৃত্যু ঘটে। (সূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ: ১৫ নভেম্বর ২০২৩)

 খবর: ২

কক্সবাজারে আওয়ামী লীগ নেতা খুনের নেপথ্যে সমকামিতা: পুলিশ

আশরাফুল নামক এক ব্যক্তির সঙ্গে সমকামিতার সম্পর্ক ছিল আওয়ামীলীগ নেতা সাইফউদ্দিনের। এ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের একটা ভিডিও করে রেখেছিলো নিহত সাইফ। ভিডিওটি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে আশরাফুলের সঙ্গে প্রায়ই একই কাজ করতেন তিনি। এর জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে হোটেল কক্ষে খুন করে আশরাফুল। (তথ্যসূত্র: সময়ের আলো, ২৩ আগস্ট, ২০২৩)

 খবর:৩

কিশোরগঞ্জে সমকামিতা থেকে রেহাই পেতে খুন

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় ইসমাইল (৪০) নামক এক ব্যক্তির বিকৃত রুচি থেকে বাচতে তাকে হত্যা করে গোলাম রাব্বী (২০) নামে এক কলেজছাত্র। (তথ্যসূত্র: দৈনিক মানবজমিন, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩)

 এ সংবাদগুলো নির্দেশ করে সমাজে বিকৃত রূচি পুরুষের সংখ্যা বাড়ছে। কোন উপায়ে পুরুষের বিকৃত রূচির বৃদ্ধি ঘটানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়া, নিষিদ্ধ ওয়েবসাইটকে কাজে লাগনো হচ্ছে। আর সেই বিকৃত রূচির কারণে বাড়ছে পুরুষ নির্যাতন বা খুনোখুনির ঘটনা। মূলতঃ সেই বিকৃত রুচির চাহিদা মেটাতেই সমাজে হঠাৎ বৃদ্ধি করা হয়েছে ট্রান্সজেন্ডার শ্রেনীটির। ট্রান্সজেন্ডারদের সমাজে বৈধ করতে ‘পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠী, অুমক-তমুক বলা হচ্ছে অনেক কিছু, কিন্তু আসল কথা হলো বিকৃতরূচির চাহিদা মেটানোর জন্য কথিত ট্রান্সজেন্ডার শ্রেনীটির কৃত্তিম উদ্ভব ঘটাচ্ছে একটি মহল।

 আজ থেকে এক যুগ আগে হুমায়ুন আহমেদ নির্মিত ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ ছবিতে দেখা যায়, বিকৃতমনা জমিদারের জন্য ঘেটুপুত্র কমলা নামক বালকের আবির্ভাব ঘটে। এখানে লক্ষ্যনীয়, ঘেটুপুত্র কমলার কারণে জমিদার তৈরী হয়নি, বরং বিকৃতমনা জমিদারদের কারণে ঘেটুপুত্র কমলা তৈরী হয়েছে।

 আর তাছাড়া বাংলাদেশে বেকারত্ব এখন একটি বড় সমস্যা। অনেক পুরুষ বেকার হয়ে বসে আছে। কিছু করতে চাইলেও পারছে না। এ অবস্থায় সেই বেকার শ্রেনীটিকে ট্রান্সজেন্ডার বানিয়ে আর্থিক লাভবান হওয়ার লোভ দেখানো হচ্ছে। মিডিয়াতে ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে বার বার সংবাদ, প্রতিবেদন হচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার হচ্ছে, এটা আসলে কিছু না, এক ধরনের এসকর্ট বিজ্ঞাপন।

 স্বভাবতই সমকামীতার মত বিষয়গুলো অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ হওয়ায় অনেক মানুষ তা নিয়ে কথা বলতে আগ্রহী হন না। দেখেও না দেখে থাকতে চান। কিন্তু এসব অপসংস্কৃতি ও বিকৃতমনার বিরুদ্ধে চুপ থাকার সময় এটা নয়। অন্তত যখন মিডিয়াতে এ ইস্যুটা ভরপুর কিংবা স্কুলের পাঠ্যবইয়ে আপনার শিশুকেও এতে আগ্রহী করা অপপ্রয়াস ঘটছে। তাই আপনি চুপ থাকতে চাইলেও তা হবে না, কারণ এসব অপসংষ্কৃতির হাত আপনার নিকট মানুষগুলোকেও ছুতে চাইছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র ‍কুরআন শরীফেও সমকামীতা নামক জঘন্য পাপাচারের ক্ষতি উল্লেখ করে আমাদের সাবধান করেছেন। হযরত লুত আলাইহিস সালামের কওম এ বিকৃতমনা পাপাচার করায় তাদের ধ্বংস করা হয়েছে, সৃষ্টি হয়েছে ডেড সি বা মৃত সাগর। তাই বর্তমান সমাজেও যদি এ পাপাচার বৃদ্ধি পায়, তবে আমাদের মাঝেও খোদায়ী আজাব গজব নেমে আসবে। আজাব-গজব আসলে ভালো মন্দ একাকার হয়ে যাবে, আমরা তাই সে গজবে পড়তে পারি। সুতরাং গজব থেকে বাচতে আমাদের চুপ থাকার কোন সুযোগ নেই।

 তবে আশার কথা হচ্ছে, এ বিষয়টি নিয়ে মুসলমানরা সচেতন হচ্ছেন এবং ইতিমধ্যে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। প্রতিবাদের পর কিছু কিছু পরিবর্তন হচ্ছে। যেমন- নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্ররা সমকামী ট্রান্সজেন্ডার গেস্টের আগমনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায়, সেই ট্রান্সজেন্ডারের আসা বন্ধ হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ট্রান্সজেন্ডার কোটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার পর কৃত্তিম ট্র্যান্সজেন্ডার কোটা বাতিলের ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ফেসবুক-ইউটিউবে কলকাতার স্যান্ডিসাহা ও ইমরানের বিকৃত রুচিপনার বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধ ঢাবি ছাত্র মহিউদ্দিন রনি জিডি করলে ইমরান এসে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে কান্নাকাটি করে।

 এ থেকে বুঝা যায়, প্রতিবাদ করলে কাজ হয়। তাই আসুন এ জঘন্য পাপাচারের বিরুদ্ধ আমরা সবাই সোচ্চার হই প্রতিবাদ করি। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় আইন দণ্ডবিধি ৩৭৭ ধারাতেও এ বিকৃতমনা পাপাচার নিষিদ্ধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ বলে গণ্য করা হয়েছে। বাংলাদেশের আইনে নিষিদ্ধ থাকার পরও কিভাবে এ জঘন্য পাপাচারটি সমাজে প্রচার হচ্ছে এবং মানুষকে সে জঘন্য পাপের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে, আসুন তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি, আওয়াজ তুলি।

 

Comments