সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, আমীরুল মু’মিনীন হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যখন অর্ধ শা’বানের রাত তথা পবিত্র লাইলাতুল বরাত শরীফ উপস্থিত হবে, তখন তোমরা উক্ত রাতে সজাগ থেকে ইবাদত-বন্দেগী করবে এবং দিনের বেলা রোযা রাখবে। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি উক্ত রাতে সূর্যাস্তের সময় পৃথিবীর আকাশে রহমতে খাছ নাযিল করেন। অতঃপর ঘোষণা করতে থাকেন, কোনো ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে ক্ষমা করে দিব। কোনো রিযিক প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে রিযিক দান করবো। কোনো মুছিবতগ্রস্ত ব্যক্তি আছো কি? আমি তার মুছিবত দূর করে দিবো। এভাবে ছুবহে ছাদিক পর্যন্ত ঘোষণা করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! (ইবনে মাযাহ শরীফ, মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ)
আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্য হবে, উক্ত পবিত্র রাতে ইবাদত-বন্দেগী করা, তওবা-ইস্তিগফার করা, দিনে রোযা রাখা। প্রতি মাসে কমপক্ষে তিনটি রোযা রাখা খাছ সুন্নত। সে হিসেবে শবে বরাতের রোযার সাথে মিলিয়ে ১৩, ১৪, ১৫ তারিখ রোযা রাখা উত্তম।
সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তি পবিত্র শা’বান শরীফ মাসে তিনটি রোযা রাখবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে জান্নাতী উটনিতে করে পুলছিরাত পর করাবেন।” (ইবনু নুবাতা)
সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “যে ব্যক্তি পবিত্র শা’বান শরীফ মাসে তিনটি রোযা রাখবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তার গুনাহখাতা ক্ষমা করে দিবেন।” সুবহানাল্লাহ!
যদি তিনটি রোযা রাখা সম্ভব না হয়, তবে অন্ততপক্ষে পবিত্র শবে বরাতের দিন অর্থাৎ ১৫ই শা’বান শরীফ দিনে রোযা রাখতে হবে। কেননা সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “যে ব্যক্তি শা’বান মাসের ১৫ তারিখ অর্থাৎ বরাতের রোযা রাখবে, তাকে কখনো জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না।” সুবহানাল্লাহ!
‘নুযহাতুল মাজালিস’ নামক বিশ্ববিখ্যাত কিতাবে উল্লেখ আছে, নিশ্চয়ই জিন, পশু-পাখি এবং এমন কি সমুদ্রের মাছও অর্ধ শা’বানের তথা ১৫ শা’বানের দিন রোযা রাখে।” সুবহানাল্লাহ!
‘তাফসীরে রুহুল মায়ানী’তে উল্লেখ আছে, “যে ব্যক্তি পবিত্র লাইলাতুল বরাতের রাতে ইবাদত-বন্দেগী করবে এবং দিনে রোযা রাখবে মহান আল্লাহ পাক তিনি ২০টি কবুল হজ্জের ছওয়াব এবং ২০ বছর রোযা রাখার ছওয়াব তার আমলনামায় লিখে দিবেন। সুবহানাল্লাহ!
‘নুযহাতুল মাজালিস’ কিতাবে রোযার ফযীলত সম্পর্কে আরো উল্লেখ আছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তি পবিত্র শা’বান মাসে অর্থাৎ পবিত্র শবে বরাতে মাত্র একটি রোযা রাখবে, তার দেহের জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি দোযখের আগুনের জন্য হারাম করে দিবেন এবং বেহেশতের মাঝে সে ব্যক্তি হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম উনার সঙ্গী হিসেবে থাকবেন এবং তার সঙ্গে হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালাম উনার ও হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম উনার ন্যায় ছওয়াব দান করবেন।
সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “পবিত্র শা’বান শরীফ মাসের ১৫ তারিখ যারা রোযা রাখবে, তারা ইফতারীর সময় ৩বার দুরূদ শরীফ পাঠ করবে। তাহলে তার পূর্বের গুনাহখাতা ক্ষমা করা হবে এবং রিযিকে বরকত দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার এবং উনার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানার্থে মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত মুসলমান উনাদেরকে এই সম্মানিত রাতে ইবাদত বন্দেগী করার এবং রোযা রাখার তাওফীক দান করুন। আমীন!
Search
Popular Posts
- ২১শে ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের পাশাপাশি আরেকটি দিবস পালন করা উচিত
- সহশিক্ষা, সহচাকরীর ভয়াবহতা: পৃথিবীজুড়ে নারী সংসদ সদস্যরা ব্যাপক হারে যৌন হয়রানির শিকার -আইপিইউ
- সহশিক্ষা, সহচাকরীর ভয়াবহতা: পৃথিবীজুড়ে নারী সংসদ সদস্যরা ব্যাপক হারে যৌন হয়রানির শিকার -আইপিইউ
- শবে বরাত আপনি কেন ঢাকা রাজারবাগ দরবার শরীফে পালন করবেন?
- ‘ছেলেদের সাথে সহশিক্ষা, সহচাকরী পছন্দ করে না মার্কিন মেয়েরা’ -বৃটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা