নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
দুনিয়া ঐ ব্যক্তির জন্য ঘর, যার পরকালে কোন ঘর নেই। দুনিয়া ঐ ব্যক্তির জন্য সম্পদ, যার পরকালে কোন সম্পদ নেই। আর দুনিয়ায় ঐ ব্যক্তি সম্পদ জমা করে যার কোনো আক্বল নেই।

মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তা‘আলা জাল্লা শানুহূ তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি মু’মিনদের জান ও মাল জান্নাতের বিনিময়ে ক্রয় করে নিয়েছেন।

Ahmad shared a post  
2 m

36 m

🔸 সুওয়াল:-এক মাসিক পত্রিকায় হজ্জের অজুহাতে ছবি তোলাকে বৈধ বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে দলীল হিসেবে পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ ১৭৩, পবিত্র সূরা আনআম শরীফ ১১৯ ও ১৪৫ নং পবিত্র আয়াত শরীফ উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, তীব্র প্রয়োজন হারাম বস্তুকে সাময়িক হালাল করে দেয়। তাই হজ্জের ফরয আদায় করতে হারাম ছবি তোলা সাময়িক বৈধতা পাবে। নাউযুবিল্লাহ! এ বিষয়ে সঠিক জাওয়াব কি?

📖 জাওয়াব:-উক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণরূপে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের খিলাফ বা বিরোধী ও কুফরী হয়েছে। কারণ হারাম বা ফাসিকী কাজ করে তথা ছবি তুলে, বেপর্দা হয়ে হজ্জ করা যাবে না। এটা সরাসরি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

فَمَنْ فَـرَضَ فِيْهِنَّ الْـحَجَّ فَلَا رَفَثَ وَلَا فُسُوْقَ وَلَا جِدَالَ فِى الْـحَجِّ ۗ وَمَا تَـفْعَلُوْا مِنْ خَيْرٍ يَّـعْلَمْهُ اللّٰـهُ ۗ وَتَـزَوَّدُوْا فَاِنَّ خَيْـرَ الزَّادِ التَّـقْوٰى ۚ وَاتَّـقُوْنِ يَا اُولِى الْاَلْبَابِ

অর্থ: “যার প্রতি হজ্জ ফরয সে যেন হজ্জ পালনকালে অশ্লীল-অশালীন কাজ না করে এবং কোন প্রকার ফাসিকী কাজ না করে এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে। আর তোমরা যে নেক কাজ করো তা মহান আল্লাহ পাক তিনি জানেন। তোমরা পাথেয় সংগ্রহ করো। নিশ্চয়ই উত্তম পাথেয় হচ্ছে তাক্বওয়া। ” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৯৭)

বলার অপেক্ষা রাখে না, ছবি তোলা ও বেপর্দা হওয়া প্রকাশ্য ফাসিকী ও অশ্লীল-অশালীন কাজ। উক্ত হারাম কাজ আমভাবে সকলের জন্য নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও হজ্জ পালনকারীদের জন্য খাছভাবে নিষেধ করা হয়েছে।

কাজেই, হজ্জ করার জন্য ছবি তোলা ও বেপর্দা হওয়া ইত্যাদি হারাম কাজ করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের হুকুম মোতাবেক হারাম। তাছাড়া হজ্জে মাবরূর অর্থাৎ হজ্জ কবুল হওয়ার জন্য শর্তই হচ্ছে সমস্ত প্রকার হারাম কাজ থেকে বেঁচে থাকা।

শুধু তাই নয়, হজ্জ ফরয হওয়ার জন্য শুধু পাথেয় বা অর্থ-সম্পদ থাকাই শর্ত নয়। বরং আরো অনেক শর্ত রয়েছে। তন্মধ্যে হারাম থেকে বেঁচে থাকাও একটি অন্যতম শর্ত। হজ্জ ফরয হওয়ার জন্য সমস্ত শর্ত পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কারো প্রতি হজ্জ ফরয হবে না।

মোটকথা, হজ্জ পালনকালে যেখানে সমস্ত হারাম থেকে বেঁচে থাকা শর্ত করা হয়েছে, সেই হারাম কাজ আবার হজ্জের জন্য বৈধ বা হালাল হয় কি করে? কখনই বৈধ হতে পারে না।

এরা এমন জাহিল যে, মাসয়ালা হচ্ছে এক বিষয়ে আর দলীল দিয়েছে অন্য বিষয়ে। তা হচ্ছে, যখন কেউ হালাল খাদ্যের ব্যবস্থা করতে চরমভাবে নিরুপায় হয়ে যায় অথবা কেউ ৩ দিন অভুক্ত বা না খেয়ে থাকে তখন জীবন বাঁচানোর তাগিদে তার জন্য আবশ্যিক পরিমাণ হারাম খাদ্য গ্রহণ করাটা মুবাহ হয়। কিন্তু তা বৈধ বা হালাল হয়ে যায় না। সেটাই সুওয়ালে উল্লেখিত পবিত্র আয়াত শরীফসমূহ উনাদের মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে।

যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اِنَّمَا حَرَّمَ عَلَيْكُمُ الْمَيْـتَةَ وَالدَّمَ وَلَحْمَ الْخِنْزِيْرِ وَمَا اُهِلَّ بِهٖ لِغَيْرِ اللّٰـهِ ۖ فَمَنِ اضْطُرَّ غَيْـرَ بَاغٍ وَّلَا عَادٍ فَلَا اِثْمَ عَلَيْهِ ۚ اِنَّ اللّٰـهَ غَفُوْرٌ رَحِيْمٌ

অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি মৃত প্রাণী, রক্ত, শূকরের গোশত এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত অন্যের নামে যবাইকৃত পশুকে খাদ্যবস্তুরূপে হারাম ঘোষণা করেছেন। কিন্তু যে অনন্যোপায় অথচ অন্যায়কারী অথবা সীমালঙ্ঘণকারী নয় তার জন্য কোন গুনাহ হবে না। মহান আল্লাহ পাক তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৭৩)

উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীর বা ব্যাখ্যায় সুপ্রসিদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য তাফসীর গ্রন্থ “তাফসীরে মাযহারীতে” উল্লেখ রয়েছে যে, যারা ক্ষুধার কারণে অনন্যোপায় (সীমালঙ্ঘন না করে) হারাম বস্তু ভক্ষণ করে তাদের জন্য কোনো গুনাহ হবে না। কেননা তারা অন্যায়কারী নয়, আর এমতাবস্থায় খাদ্য আস্বাদনও তাদের উদ্দেশ্য থাকে না। উদ্দেশ্য থাকে শুধুমাত্র জীবন বাঁচানো। এ রকম নিরুপায় অবস্থায় যতটুকু খাদ্য গ্রহণ করলে মৃত্যুর আশঙ্কা রোধ হয়, ততোটুকুই গ্রহণ করা মুবাহ। এর অতিরিক্ত নয়। এক্ষেত্রে হারাম বস্তুগুলো হালাল বলা কুফরী হবে বরং মুবাহ বলতে হবে মাজুর হিসেবে।

অনুরূপ পবিত্র সূরা আনআম শরীফ উনার ১১৯ নং আয়াত শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

وَمَا لَكُمْ اَلَّا تَأْكُلُوْا مِمَّا ذُكِرَ اسْمُ اللّٰهِ عَلَيْهِ وَقَدْ فَصَّلَ لَكُمْ مَا حَرَّمَ عَلَيْكُمْ اِلَّا مَا اضْطُرِرْتُمْ اِلَيْهِ

অর্থ: “যে পশুর উপর (যবেহ কালে) মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারক উচ্চারিত হয়েছে তা হতে না খাওয়ার ব্যাপারে তোমাদের কি কারণ থাকতে পারে? অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন যেগুলো তোমাদের জন্য হারাম করেছেন। কিন্তু যখন তোমরা নিরুপায় হয়ে যাও তখন হারাম বস্তুগুলোর মাধ্যমে জীবন রক্ষা করতে পারো। ”

উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় “তাফসীরে মাযহারীতে” উল্লেখ রয়েছে, যখন জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে তখন জীবন রক্ষার জন্য হারাম বস্তু ভক্ষণ করা যেতে পারে। হারাম তখনও হারামই থাকে। কিন্তু জীবন রক্ষার অত্যাবশ্যক তাগিদে তখন হারাম ভক্ষণ করলে গুনাহ হবে না মুবাহ হিসেবে। (অসমাপ্ত)

al-ihsan.net

image

কাফের মুশরেকদের হাকিকত ফাঁস
সমস্ত কাফের মুশরেক মুসলমানদের প্রকাশ্য শত্রু

image

image

imageimage

বাচঁতে হলে মানতে হবে
-------------------------------
বর্তমানে দেশে ঘনঘন ভূমিকম্প হচ্ছে উক্ত বিষয়ের উপর বিশেষ নছীহত মুবারক এবং দেশের সকল মানুষকে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা মুবারক দিয়েছেন রাজারবাগ শরীফ উনার সম্মানিত মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম।

★ দেশের সকল মসজিদ-মাদরাসা এবং স্থানীয়ভাবে সকল স্থানে সম্মিলিতভাবে
বেশি বেশি তওবা ইস্তিগফার, দোয়া করা।

★ বেশি বেশি দুরুদ শরীফ, মীলাদ শরীফ
এবং ছলাত-সালাম পাঠ করা।

★ নিয়মিতভাবে নামাজ আদায় করা।

★ বেপর্দা-বেহায়াপনা, হারাম সকল কাজ
বর্জন করে নেক আমল করা শুরু করা ।

★ বিদআতী জীবন বাদ দিয়ে সুন্নতী জীবন
যাপন শুরু করা।

★পাপ কাজ থেকে দূরে থাকা এবং যারা
লিপ্ত তাদেরকে বাধা দেওয়া।

★ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত
বুলন্দি শান মুবারক ফুটিয়ে তোলা।

★ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিরোধিতাকারীদের
শাস্তির ব্যবস্থা করা।

★ অন্যায় কাজের বাধা দেওয়া এবং নেক
কাজে সহযোগিতা করা।

★ নিয়মিত পবিত্র কুরআন শরীফ
তিলাওয়াত করা।

★ বেশী বেশী নেককার-আল্লাহ ওয়ালা উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করা।


★ মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদের সবাইকে সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম এবং হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের উছিলায় সকল প্রকার আযাব-গযব থেকে হিফাযত করেন। আমীন।

image

حَبِيبُ الْأَحِبَّةِ، حَبِيبُ اللهِ ﷺ، فِي ذَاكِرَتِي
প্রিয়দের প্রিয়,হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার স্মৃতিতে- ২১
................
আমিতো বাসায় বিছানায় পড়ে থাকি। সবাই জানে আমি অসুস্থ, কিন্তু প্রায় সময় আমি কাদঁতে কাদঁতে বিছানা হতে নীচে পড়ে যাই। আম্মু এসে ধরাধরি করে তোলেন আর বলেন- তুমি এত কাদঁছো কেনো? আমি আছিনা! আমি বললাম-না আম্মু! আমিতো বাবাজান কিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে ছাড়া বাচঁবো না। উনাকে ছাড়া থাকতে পারবো না। আম্মু আবার সবার সাথে আমি কি বলি সেগুলো আলাপ করেন। আত্নীয় স্বজন বিভিন্নজন শুনে বলেন- আপনার ছেলেকে কেউ তাবিজ করেছে নয়তো জ্বিনে ধরেছে। এজন্য সে এমন করে। আমি পাশের রুম থেকে সব শুনি! এসময় একদিন শরীরে শক্তি নিয়ে আমি উঠলাম। চিন্তা করলাম হায় আল্লাহ পাক! পবিত্র দরবার শরীফে তো আমাকে ভাইয়ারা দায়েমী সুন্নত মুবারক পাগড়ি পড়িয়ে দিতেন। আমি এখন সুন্নতী নিয়মে কিভাবে পড়বো। আমার মহান মামদুহ মুরশিদ কিবলা আলাইহিস সালাম কত সুন্দর করে পাগড়ি পড়েন। এসব চিন্তা করে আমি নিজেই দৃঢ়তার সাথে আয়নার সামনে দাড়িয়ে পাগড়ি পড়া শুরু করলাম। আমার মনে হলো কেউ আমার হাতের সাথে হাত মিলিয়ে আমাকে সুন্দর করে পাগড়ি পড়িয়ে দিলেন। সেই যে নিজে নিজে পাগড়ি পড়া শিখলাম পবিত্র দরবার শরীফে প্রায় সবাই বলাবলি করতেন আমার পাগড়ি বাধা খুব সুন্দর! নতুন কেউ বায়াত মুবারক গ্রহন করলেই আমার দ্বারা পাগড়ি পড়াতে নিয়ে আসতেন সবাই। এমনকি পবিত্র দরবার শরীফে বহু বহু সিনিয়র জুনিয়র পীরভাইগন বিয়ের সময় উনাদের পাগড়ি আমিই পড়িয়ে দিতাম! প্রিয়দের প্রিয়, নুরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাস সুন্নত মুবারক পাগড়ি পরিধানের দক্ষতা হাসিল করায় নিজেকে অনেক সৌভাগ্যবান মনে হয়েছে। আমার মহান মামদুহ মুরশিদ কিবলা কাবা আলাইহিস সালাম তিনি অনেক সময় আমাকে উনার নুরানী আঙ্গুল মুবারক দিয়ে স্পর্শ মুবারক করে আমার মাথার পাগড়ি ঠিক করে দিতেন, খাস সুন্নতী পদ্ধতি তিনি আমাকে বুঝিয়ে দিতেন। সুবহানাল্লাহ!

Read Less

image

🔸 সুওয়াল:-এক মাসিক পত্রিকায় হজ্জের অজুহাতে ছবি তোলাকে বৈধ বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে দলীল হিসেবে পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ ১৭৩, পবিত্র সূরা আনআম শরীফ ১১৯ ও ১৪৫ নং পবিত্র আয়াত শরীফ উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, তীব্র প্রয়োজন হারাম বস্তুকে সাময়িক হালাল করে দেয়। তাই হজ্জের ফরয আদায় করতে হারাম ছবি তোলা সাময়িক বৈধতা পাবে। নাউযুবিল্লাহ! এ বিষয়ে সঠিক জাওয়াব কি?

📖 জাওয়াব:-উক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণরূপে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের খিলাফ বা বিরোধী ও কুফরী হয়েছে। কারণ হারাম বা ফাসিকী কাজ করে তথা ছবি তুলে, বেপর্দা হয়ে হজ্জ করা যাবে না। এটা সরাসরি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

فَمَنْ فَـرَضَ فِيْهِنَّ الْـحَجَّ فَلَا رَفَثَ وَلَا فُسُوْقَ وَلَا جِدَالَ فِى الْـحَجِّ ۗ وَمَا تَـفْعَلُوْا مِنْ خَيْرٍ يَّـعْلَمْهُ اللّٰـهُ ۗ وَتَـزَوَّدُوْا فَاِنَّ خَيْـرَ الزَّادِ التَّـقْوٰى ۚ وَاتَّـقُوْنِ يَا اُولِى الْاَلْبَابِ

অর্থ: “যার প্রতি হজ্জ ফরয সে যেন হজ্জ পালনকালে অশ্লীল-অশালীন কাজ না করে এবং কোন প্রকার ফাসিকী কাজ না করে এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে। আর তোমরা যে নেক কাজ করো তা মহান আল্লাহ পাক তিনি জানেন। তোমরা পাথেয় সংগ্রহ করো। নিশ্চয়ই উত্তম পাথেয় হচ্ছে তাক্বওয়া। ” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৯৭)

বলার অপেক্ষা রাখে না, ছবি তোলা ও বেপর্দা হওয়া প্রকাশ্য ফাসিকী ও অশ্লীল-অশালীন কাজ। উক্ত হারাম কাজ আমভাবে সকলের জন্য নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও হজ্জ পালনকারীদের জন্য খাছভাবে নিষেধ করা হয়েছে।

কাজেই, হজ্জ করার জন্য ছবি তোলা ও বেপর্দা হওয়া ইত্যাদি হারাম কাজ করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের হুকুম মোতাবেক হারাম। তাছাড়া হজ্জে মাবরূর অর্থাৎ হজ্জ কবুল হওয়ার জন্য শর্তই হচ্ছে সমস্ত প্রকার হারাম কাজ থেকে বেঁচে থাকা।

শুধু তাই নয়, হজ্জ ফরয হওয়ার জন্য শুধু পাথেয় বা অর্থ-সম্পদ থাকাই শর্ত নয়। বরং আরো অনেক শর্ত রয়েছে। তন্মধ্যে হারাম থেকে বেঁচে থাকাও একটি অন্যতম শর্ত। হজ্জ ফরয হওয়ার জন্য সমস্ত শর্ত পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কারো প্রতি হজ্জ ফরয হবে না।

মোটকথা, হজ্জ পালনকালে যেখানে সমস্ত হারাম থেকে বেঁচে থাকা শর্ত করা হয়েছে, সেই হারাম কাজ আবার হজ্জের জন্য বৈধ বা হালাল হয় কি করে? কখনই বৈধ হতে পারে না।

এরা এমন জাহিল যে, মাসয়ালা হচ্ছে এক বিষয়ে আর দলীল দিয়েছে অন্য বিষয়ে। তা হচ্ছে, যখন কেউ হালাল খাদ্যের ব্যবস্থা করতে চরমভাবে নিরুপায় হয়ে যায় অথবা কেউ ৩ দিন অভুক্ত বা না খেয়ে থাকে তখন জীবন বাঁচানোর তাগিদে তার জন্য আবশ্যিক পরিমাণ হারাম খাদ্য গ্রহণ করাটা মুবাহ হয়। কিন্তু তা বৈধ বা হালাল হয়ে যায় না। সেটাই সুওয়ালে উল্লেখিত পবিত্র আয়াত শরীফসমূহ উনাদের মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে।

যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اِنَّمَا حَرَّمَ عَلَيْكُمُ الْمَيْـتَةَ وَالدَّمَ وَلَحْمَ الْخِنْزِيْرِ وَمَا اُهِلَّ بِهٖ لِغَيْرِ اللّٰـهِ ۖ فَمَنِ اضْطُرَّ غَيْـرَ بَاغٍ وَّلَا عَادٍ فَلَا اِثْمَ عَلَيْهِ ۚ اِنَّ اللّٰـهَ غَفُوْرٌ رَحِيْمٌ

অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি মৃত প্রাণী, রক্ত, শূকরের গোশত এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত অন্যের নামে যবাইকৃত পশুকে খাদ্যবস্তুরূপে হারাম ঘোষণা করেছেন। কিন্তু যে অনন্যোপায় অথচ অন্যায়কারী অথবা সীমালঙ্ঘণকারী নয় তার জন্য কোন গুনাহ হবে না। মহান আল্লাহ পাক তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৭৩)

উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীর বা ব্যাখ্যায় সুপ্রসিদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য তাফসীর গ্রন্থ “তাফসীরে মাযহারীতে” উল্লেখ রয়েছে যে, যারা ক্ষুধার কারণে অনন্যোপায় (সীমালঙ্ঘন না করে) হারাম বস্তু ভক্ষণ করে তাদের জন্য কোনো গুনাহ হবে না। কেননা তারা অন্যায়কারী নয়, আর এমতাবস্থায় খাদ্য আস্বাদনও তাদের উদ্দেশ্য থাকে না। উদ্দেশ্য থাকে শুধুমাত্র জীবন বাঁচানো। এ রকম নিরুপায় অবস্থায় যতটুকু খাদ্য গ্রহণ করলে মৃত্যুর আশঙ্কা রোধ হয়, ততোটুকুই গ্রহণ করা মুবাহ। এর অতিরিক্ত নয়। এক্ষেত্রে হারাম বস্তুগুলো হালাল বলা কুফরী হবে বরং মুবাহ বলতে হবে মাজুর হিসেবে।

অনুরূপ পবিত্র সূরা আনআম শরীফ উনার ১১৯ নং আয়াত শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

وَمَا لَكُمْ اَلَّا تَأْكُلُوْا مِمَّا ذُكِرَ اسْمُ اللّٰهِ عَلَيْهِ وَقَدْ فَصَّلَ لَكُمْ مَا حَرَّمَ عَلَيْكُمْ اِلَّا مَا اضْطُرِرْتُمْ اِلَيْهِ

অর্থ: “যে পশুর উপর (যবেহ কালে) মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারক উচ্চারিত হয়েছে তা হতে না খাওয়ার ব্যাপারে তোমাদের কি কারণ থাকতে পারে? অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন যেগুলো তোমাদের জন্য হারাম করেছেন। কিন্তু যখন তোমরা নিরুপায় হয়ে যাও তখন হারাম বস্তুগুলোর মাধ্যমে জীবন রক্ষা করতে পারো। ”

উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় “তাফসীরে মাযহারীতে” উল্লেখ রয়েছে, যখন জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে তখন জীবন রক্ষার জন্য হারাম বস্তু ভক্ষণ করা যেতে পারে। হারাম তখনও হারামই থাকে। কিন্তু জীবন রক্ষার অত্যাবশ্যক তাগিদে তখন হারাম ভক্ষণ করলে গুনাহ হবে না মুবাহ হিসেবে। (অসমাপ্ত)

al-ihsan.net

image