@@ মুমিনের উচিত আল্লাহ পাক উনার উপর তাওয়াক্কুল বা ভরসা করা
--------------------------------------------------------------------------------------
এক লোক সূফী দরবেশ হবার লক্ষে রিয়াযত মাশাক্কাত করার জন্য নির্জন স্থানে গেল। সেখানে গিয়ে সে ইবাদাত বন্দেগীতে মশগুল হল। দেখা গেল প্রতিদিন লোকটির খাবারের কুদরতি বাবস্থা হতে লাগলো। এভাবে কিছুদিন চলার পর হঠাৎ একদিন খাবার আসা বন্ধ হয়ে গেল। লোকটি দুই একদিন অপেক্ষা করল। কিন্তু যখন দেখল খাবার আর আসে না তখন সে পার্শ্ববর্তী গ্রামে গেল খাবারের খোঁজে। গ্রামের একবাক্তি তাকে তিনটা রুটি দিল। রুটি নিয়ে যখন সে ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসছে তখন বাড়ির মালিকের কুকুরটি তার রাস্তা আটকাল। তাকে সে কিছুতেই যেতে দেবে না। নিরুপায় হয়ে লোকটি কুকুরটিকে একটি রুটি খেতে দিল এই আশায় যে কুকুরটি তার পথ ছেড়ে দিবে। কিন্তু কুকুর রুটি খেয়ে পুনরায় ঘেউঘেউ করতে লাগলো। লোকটি তখন তাকে আরেকটি রুটি দিল। কুকুর সেটাও খেয়ে ফেলল কিন্তু পথ ছাড়ল না। অবশেষে লোকটি তাকে শেষ রুটিটিও দিয়ে দিল। কুকুর সেটাও খেয়ে ফেলে পথ আটকে রাখল। লোকটি এবার রেগে গিয়ে বলল যে, কুকুরটি খুবই না-শোকর পশু। তাকে লোকটি নিজের তিনটা রুটি দিয়ে দেবার পরও সে তার রাস্তা আটকে রেখেছে। তখন মহান আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছায় কুকুরটির জবান খুলে গেল। সে লোকটিকে বলল যে, সে না-শোকর পশু নাকি লোকটি না-শোকর বান্দা? কুকুরকে তার মালিক যদি নাও খেতে দেয় তবু সে মালিকের বাড়িতেই পড়ে থাকে। খাবারের জন্য অন্যের দরজায় যায় না। আর লোকটিকে তো আল্লাহ পাক খেতে দিচ্ছিলেনই। তবু মাত্র দুই একদিন খাবার না আসাতেই সে আরেকজনের প্রতি মোহতাজ হয়ে গেল? এই কি তার মালিক উনার উপর ভরসা?
পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, “আপনি বলুন, আল্লাহ পাক আমাদের ভাগ্যে যা লিখেছেন তাই পৌঁছবে। তিনিই আমাদের মাওলা বা অভিভাবক। মুমিনের উচিত আল্লাহ পাক উনার উপর তাওয়াক্কুল বা ভরসা করা।“ (সুরা তওবাঃ ৫১ নং আয়াত শরীফ)।
কিন্তু হাকিকি তাওয়াক্কুল কয়জন করতে পারে? যদি পারত তবে কি রিযিকের জন্য, আল্লাহ পাক যাদের মুসলমানদের শত্রু বলে ঘোষণা করেছেন, সেই সব কাফির মুশরিকদের দ্বারস্থ হতে পারত? মানুষ এখন রিযিকের জন্য নিজের দ্বীন পর্যন্ত বিক্রি করে দেয়। অথচ বলা হয়েছে, মৃত্যু মানুষকে যেভাবে তালাশ করে রিযিকও তাকে সেইভাবেই তালাশ করে। কোন মানুষের জন্য যতটুকু রিযিক নির্দিষ্ট আছে তা যেভাবেই হোক তার কাছে পৌঁছবেই এবং তা শেষ হবার আগে তার মৃত্যু হবেনা। সুতরাং আমাদের উচিত দিবারাত্রি রিযিকের ফিকিরে না থেকে রিযিকের যিনি মালিক উনার ফিকিরে থাকা।