আদিবাসী কারা
=======================
‘আদিবাসী’ মানে হচ্ছে ‘আদিমতম অধিবাসী’। ‘আদিবাসী’ শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘ওহফরমবহড়ঁং ঢ়বড়ঢ়ষব’. প্রখ্যাত নৃতত্ত্ববিদ মর্গানের সংজ্ঞানুযায়ী আদিবাসী হচ্ছে, ‘কোনো স্থানে স্মরণাতীতকাল থেকে বসবাসকারী আদিমতম জনগোষ্ঠী যাদের উৎপত্তি, ছড়িয়ে পড়া এবং বসতি স্থাপন সম্পর্কে বিশেষ কোনো ইতিহাস জানা নেই।’ মর্গান বলেছে, ÔThe Aboriginals are the groups of human race who have been residing in a place from time immemorial … they are the true Sons of the soil..Õ .(Morgan, An Introduction to Anthropology, 1972)
একটি বিশেষ স্বার্থান্বেষী মহল ‘আদিবাসী’ বিতর্ক তুলে ইতিহাস বিকৃতায়নের মাধ্যমে বাঙালি জনগোষ্ঠীকে হেয় প্রতিপন্ন করার পাশাপাশি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত আছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে এই তথ্যবহুল আলোচনা। নিচের তথ্যসূত্রগুলোর সাহায্যে আমরা যাচাই করে দেখবো, বাংলাদেশে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও পাহাড়িদের এদেশের আদিবাসী বলা যাবে কি না। চলুন শুরু করা যাক।
(১)
ভারত-মিয়ানমার থেকে আসা ‘অভিবাসীরা’ কখনো আদিবাসী হতে পারে না। বর্তমান বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলগুলোতে উপজাতিদের বসতি স্থাপনের বহু পূর্ব থেকেই বাঙালি জনগোষ্ঠীর বসবাস ছিল, যদিও সমতলের তুলনায় পার্বত্য অঞ্চলে তাদের সংখ্যা ছিল তুলনামূলক কম। প্রস্তর যুগের বাঙালি সভ্যতার নিদর্শন স্বরুপ প্রতœতাত্ত্বিকেরা রাঙ্গামাটিতে ‘ঝঃড়হব ঊষবসবহঃ’ (পাথরের তৈরি অস্ত্র) ও ফেনীতে ‘ঐধহফ অীব’ (কুঠার) উদ্ধার করেছে, যেগুলোর বয়স ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ বছর।
বাংলাদেশের উপজাতীয় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলো এদেশের আদিবাসী নয়, তার প্রমাণ প্রখ্যাত উপজাতি গবেষক ও নৃতত্ত্ববিদ জঐঝ Huchinson (১৯০৬), ঞ ঐ খবরিহ (১৮৬৯), অমেরেন্দ্র লাল খিসা (১৯৯৬), ঔ. ঔধভভধ (১৯৮৯) এবং ঘ অযসবফ (১৯৫৯) প্রমুখের লেখা, গবেষণাপত্র, থিসিস এবং রিপোর্ট বিশ্লেষণে পাওয়া যায়।
(২)
চাকমা প-িত অমেরেন্দ্র লাল খিসা ‘অরিজিনস অব চাকমা পিপলস অব হিলট্রেক্ট চিটাগং’ এ লিখেছে, ‘তারা এসেছে মংখেমারের আখড়া থেকে পরবর্তীতে আরাকান এলাকায় এবং মগ কর্তৃক তাড়িত হয়ে বান্দরবানে অনুপ্রবেশ করে। আজ থেকে আড়াইশ তিনশ; বছর পূর্বে তারা ছড়িয়ে পড়ে উত্তর দিকে রাঙামাটি এলাকায়।’ এর প্রমাণ ১৯৬৬ সালে ‘বাংলাদেশ জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটি’ প্রকাশিত ‘দি অরিয়েন্টাল জিওগ্রাফার জার্নাল’।
-মুহম্মদ কুররাতুল আইন।
