পহেলা বৈশাখ বাঙালীর সংস্কৃতি এটা একটা পাক্কা মিথ্যা কথা।
লেখক: সাইয়্যিদ মুহম্মদ ছোয়াদ
পহেলা বৈশাখ যদি বাঙালী সংস্কৃতি হইতো,তবে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠীগুলো এ দিন অনুষ্ঠান করলো কেন ? তারা তো বাঙালী না।
বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখ পালন হয় ১৪ এপ্রিল, আপনি যদি পুরো দক্ষিণ এশিয়ার দিকে তাকান, তবে দেখবেন- ১৩ থেকে ১৫ই এপ্রিল পুরো দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে অনেক জাতিগোষ্ঠী এ দিবসটি নানান নামে পালন করছে। যেমন- বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরায় হচ্ছে এ দিবসটি পালন হয় পহেলা বৈশাখ নামে-
-আসামে হচ্ছে বিহু উৎসব নামে-
অরুনাচলে হচ্ছে সংক্রান নামে
- লাওস, কমোডিয়া আর থাইল্যান্ডেও তা পালিত হচ্ছে সংক্রান নামেই।
- মিয়ানমারে হচ্ছে থিনগায়ান নামে
- ভারতে কেরালাতে হচ্ছে বিশু নামে
-উড়িষ্যায় হচ্ছে পহেলা সংক্রান্তি নামে
-বিহারে হচ্ছে মিথিলা দিওয়াস নামে
- শ্রীলংকায় হচ্ছে সিনহালা নববর্ষ নামে
- নেপালে নতুন বর্ষ উপলক্ষে করে বিস্কা যাত্রা (থিভির উৎসব)।
-চীনে পানি ছিটানো উৎসব
- বাংলাদেশের উপজাতি গোষ্ঠীগুলো করে বৈসাবি (বৈসুক, সাংগ্রাইং ও বিজু) উৎসব নামে।
তারমানে বুঝা যাচ্ছে, এটা বাঙালীদের পৃথক কোন উৎসবের সময় না। বরং দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীদের অনুষ্ঠান।
প্রশ্ন হচেছ, এই জাতি গোষ্ঠীসমূহ কারা ?
এর উত্তর হচ্ছে, এরা হচ্ছে এ অঞ্চলের বিভিন্ন প্যাগান বা পৌত্তলিক গোষ্ঠী। কোন আব্রাহিম জাতি (মুসলমান, খ্রিষ্টান) না। লক্ষ্য করবেন, বাংলাদেশের মুসলমানরা এ দিবসটিকে সেক্যুলার দিবস বলতে চায়। কিন্তু আপনি যদি হি ন্দু, বৌ দ্ধ বা উপজাতি গোষ্ঠীগুলোর দিকে তাকান, তবে দেখবেন, চৈত্র সংক্রান্তি, পহেলা বৈশাখ বা বৈসাবি উৎসবকে কেন্দ্র করে তাদের বিভিন্ন ধর্মী য় বিশ্বাস ও আচার প্রথা আছে। হি ন্দুদের আছে ১০-১৫ ধরনের পূ জা, বৌ দ্ধদের আছে বৌদ্ধ স্নান ও জলকেলী।উপজাতিদের প্রতিটি কর্মের সাথে বিভিন্ন ধ র্মী য় বিশ্বাস জড়িত। তারা নিরামিষ ভোজন করে। কোনো প্রাণি বধ করে না। ফুল দিয়ে উপাসনা করে , বয়োজ্যেষ্ঠদের গোসল করিয়ে পায়ের কাছে পূজার নৈবেদ্য হিসেবে ফুল রাখে এবং প্রণাম করে। পাচন, পিঠা এবং নানা মুখরোচক খাবারের আয়োজন করে। নারীপুরুষ সম্মিলিতভাবে নাচ আর গানে মেতে উঠে। মন্দিরে ধর্ম অনুশীলনে রত হয়। তরুণতরুণীরা পানি ছিটিয়ে নিজেদের শুদ্ধ করে নেয়। তাদের কোন কার্যক্রমই তাদের ধ র্মী য় বিশ্বাস ও রীতি বা প্রথা থেকে বিচ্ছিন্ন নয়।
তাহলে এ অনুষ্ঠানকে বাঙালীর সেক্যুলার অনুষ্ঠান বলবেন কিভাবে ?
প্রশ্ন হচ্ছে, বাঙালী মুসলমানদের কাছে এই অনুষ্ঠানকে বাঙালীত্বের পরিচয় বলে ধর্মনি রপেক্ষ হিসেবে বলে প্রচার করলো কারা ?
এর উত্তর হচ্ছে- ই হু দীরা।
লক্ষ্য করে দেখবেন, পহেলা বৈশাখকে ই হু দীবাদী পশ্চিমা মিডিয়া খুব হাইলাইট করে।ইউনেস্কো স্বীকৃতি দেয়, সাদা চামড়ার লোকরা শাড়ি-পাঞ্জাবি পরে এসব অনুষ্ঠানে আসে।বাংলাদেশীদের পহেলা বৈশাখে খুব উৎসাহ দেয়।
প্রশ্ন আসতে পারে, পশ্চিমা সাদা চামড়ারা কেন এ দিবসটিতে উৎসাহ দেয়।
এটা তো পশ্চিমা সংস্কৃতি না। আসলে ই হু দীদের একটা খাসলত আছে। ই হু দীরা চায়, তারা ব্যতিত অন্য আব্রাহামিক ধর্মগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত হোক। এজন্য অন্য আব্রাহামিক ধর্মগুলোর (ইসলাম ও খ্রিষ্টান) মধ্যে তারা পৌত্তলিকতা ঢুকিয়ে দেয়। যেমনটা খ্রিস্টান ধর্মের ক্ষেত্রে করেছে। ত্রি-তত্ব ঢুকিয়ে দিছে। একইভাবে বিভিন্ন এলাকার আব্রাহামিক ধর্মগুলোকে নষ্ট করতে, ই হু দীরাই লোকাল প্যাগান/পৌত্তলিক কালচারগুলোতে প্রোমোট করে। পৌত্তলিক কালচারগুলোকে জাতীয় সংস্কৃতি হিসেবে উপস্থাপন করে, সেক্যুলার ভার্সন দেয়, যেন মুসলমানরা তাতে ধোকা খায়।
পহেলা বৈশাখের ক্ষেত্রেই দেখুন-
হাজার বছরের জাতীয় সংস্কৃতি বলে প্যাগান কালচার খাওয়ায় দিছে। অথচ এই সংস্কৃতি মোটেও বাঙালীদের জাতীয় সংস্কৃতি নয়, মুসলমানদের তো নয়ই। বরং পুরো দক্ষিন এশিয়ার প্যাগান বা পৌত্তলিক সংস্কৃতি।যেখানে শত শত প্যাগান জাতিগোষ্ঠীর ধর্মীয় কালচার সম্পর্কিত।এই সামান্য কথা বুঝার জন্য রকেট বিজ্ঞানী হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।
سید محمد سعاد 1 d
Coments