২২ শে জুমাদাল উলা এক বিশেষ দিন, যেদিন হযরত খাদিজাতুল কুবরা আলাইহাস সালাম উনার নিকাহ দিবস।
======================================================
বসরা হতে বাণিজ্য কাফেলা ফিরে আসার তিন মাস পর হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার পিতৃব্য আমর ইবনে আসাদের মাধ্যমে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে বিবাহের প্রস্তাব করেন। কিন্তু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বভাবসূলভ লজ্জাবশত, নীরবতার মাধ্যমে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
এক রাতে হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি স্বপ্নে দেখেন যে, সূর্য একটি আলোর পিণ্ডরূপে উনার গৃহে পতিত হয়। এ আলোতে সমগ্র পবিত্র মক্কা শরীফ আলোকিত হয়ে উঠে। এ স্বপ্নের ব্যাখ্যার জন্য তিনি স্বপ্নের তাবিরবীদগণের সঙ্গে আলোচনা করেন। তাঁরা উল্লেখ করেন, কোনো আলোকসম্পন্ন ব্যক্তির সঙ্গে উনার শুভ পরিণয় ঘটবে।
এ স্বপ্ন দেখার পরদিনই তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট পুনরায় বিবাহের প্রস্তাব প্রেরণ করেন। এ প্রস্তাবে হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি উল্লেখ করেন যে, আমি দাম্পত্য সম্পর্কে আবদ্ধ হতে চাই এ কারণে যে, আপনি আমার বংশগত আত্মীয়। আপনার পারিবারিক ঐতিহ্য, ব্যক্তিগত বিশ্বস্ততা, আন্তরিকতা, সংযত স্বভাব, সত্যবাদিতা ইত্যাদি সকলেরই শ্রদ্ধা উৎপাদন করে।
বিবাহের জন্য নির্ধারিত দিনে আবূ তালিব স্বীয় ভাই হযরত হামযা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুসহ হাশিমী গোত্রের নেতৃস্থানীয়দের নিয়ে হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার বাড়িতে গমন করেন। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বয়স মুবারক ছিল ২৫ বছর। বিবাহ মুবারক অনুষ্ঠিত হয় আনুষ্ঠানিক নুবুওওয়াত প্রকাশের ১৫ বছর পূর্বে।
এ বিবাহ সম্পাদনকালে উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার অভিভাবক ছিলেন উনার পিতৃব্য আমর ইবনে আসাদ। এ বিবাহের মোহরানা নির্ধারিত হয় ৫০০ দিরহাম। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং উনার বিশটি উট বিক্রয় করে এ বিবাহের মোহরানা আদায় করেন।
বিবাহের পর হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার অফুরন্ত ধন ভাণ্ডার হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমতে স্বেচ্ছায় হাদিয়া করে দেন। সর্বপ্রথম যেদিন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাক্ষাৎ মুবারক সংঘটিত হয়, সেদিন তিনি রাস্তায় প্রতি ক্বদম মুবারকের নিচে স্বর্ণের প্লেট বিছিয়ে দিয়ে সাদর সম্ভাষণ জানান। সুবহানাল্লাহ!
ইহা চিরন্তন সত্য কথা যে, কুলকায়িনাতের সর্বপ্রথম মা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্রতম মুহব্বত, মা’রিফাত, ইতায়াত, তায়াল্লুক, নিসবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টিই মূলত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাদেরই পবিত্রতম মুহব্বত, মা’রিফাত, ইতায়াত, তায়াল্লুক, নিসবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টিরই অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন, ত্বাহিরা, ত্বইয়িবা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সাথে অবিচ্ছদ্যভাবে মিশে আছেন। সুবহানাল্লাহ! মিশে আছেন মু’মিনগণের পবিত্র ঈমান ও ইসলাম উনাদের সাথে। কাজেই উনার পবিত্রতম জীবনী মুবারক অনুসরণ করা সকল পুরুষ-মহিলার জন্য ফরযে আইনের অন্তর্ভুক্ত।
মহান আল্লাহ পাক উনার নিদর্শনসমূহ স্বরণ করিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে পবিত্র রাজারবাগ শরীফ উনার মধ্যে আয়োজন করা হয়েছে ৩ দিন ব্যাপী-
রুইয়াতুল আইয়াত প্ৰদৰ্শনী
সময়কাল: ২০, ২১, ২২ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪১ হিজরী
এখানে প্রদর্শিত হচ্ছে- দুষ্প্রাপ্য ও দুর্লভ পবিত্র সুন্নতসমূহ। যেমন- কাঠের তৈরি সুন্নতি তৈজসপত্র, সুন্নতি বরকতময় খাদ্যসমূহ, সুন্নতি পোশাক পরিচ্ছদ। এছাড়া পবিত্র সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ উনার পোস্টার, লিফলেট, দাওয়াতকার্ডসহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী।
স্থান: সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ গেইট, রাজারবাগ দরবার শরীফ, ঢাকা-১২১৭
